ডিজিটাল বাংলাদেশের এই গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভটি বাস্তবায়নে বিসিসির বেশ কয়েকটি কার্যক্রম / প্রকল্প কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। এগুলো নীচে তুলে ধরা হলোঃ
"অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে বিসিসিকে শক্তিশালীকরণ (১ম সংশোধিত)": বিসিসির কার্যক্রম আরও জোরদার করতে এবং আইসিটি সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার সমন্বিত করার জন্য এই প্রকল্প নেয়া হয়। এ প্রকল্পের আওতায় জুলাই ২০১১ হতে জুন ২০১৫ সাল মেয়াদে বিসিসি ভবনের ৫ম তলা থেকে ১৫তলা পর্যন্ত উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের কাজ সম্পন্ন করা হয়। ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ’ এবং এর সাথে সম্পর্কিত সকল কর্তৃপক্ষ, বিভাগ এবং সংস্থা এখানে অবস্থান করছে। ফলে, ১৫-তলা বিসিসি ভবনটি সরকারের সমস্ত আইসিটি কাজের ‘সেন্টার অব এক্সিলেন্স’ হিসেবে কাজ করছে।
১০১৩টি বিদ্যুতবিহীন ইউনিয়নে সৌর-বিদ্যুৎ সহকারে Union Information Service Centre(UISC)স্থাপন করা হয়েছে । পরবর্তী কালে এ সকল সেন্টারকে Union Digital Center (UDC) নামকরণ করা হয়েছে।
১৪৭টি উপজেলা নির্বাহী অফিসে UISC সদৃশ ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে।
৩৫৪৪টি কম্পিউটার ল্যাব এবং ১০০টি স্মার্ট ক্লাশ রুম দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা হয়েছে।
২৭ টি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজে সাইবার সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলে স্থাপিত জাতীয় ডেটা সেন্টার (Tier-III) থেকে সরকারের ৭৩১+টি প্রতিষ্ঠানকে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন সার্ভিস, যেমন মেইল ডোমেইন, ওয়েব সাইট ও অ্যাপ্লিকেশন হোস্টিং, ভিপিএস সার্ভিস, ক্লাউড সার্ভিস ও গুগল ড্রাইভ এর ন্যায় জি-ড্রাইভ বা গভর্নমেন্ট ড্রাইভ সার্ভিস ইত্যাদি প্রদান করা হচ্ছে। ডাটা সেন্টার হতে সেবা গ্রহীতার সংখ্যা প্রায় ১০+ কোটি। এ পর্যন্ত ৬৪৪টি ডোমেইনে সর্বমোট ১,৪০,০০০ টি ইমেইল একাউন্ট খোলা হয়েছে। বর্তমানে এটির ডাটা সংরক্ষণ ক্ষমতা ১৪.৬ পেটাবাইট। জাতীয় ডাটা সেন্টার-এ এটুআই এর নথি সংক্রান্ত সার্ভার এবং নেটওয়ার্ক মাইগ্রেশন এর কাজে সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
যশোরে ডিজাস্টার রিকভারি সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে।
গাজীপুরের কালিয়াকৈর-এ বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে বিশ্বের ৭ম বৃহত্তম জাতীয় ডেটা সেন্টার (Tier-IV) সেন্টারটি গত ২৮ নভেম্বর ২০১৯ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক উদ্বোধনের মাধ্যমে চালু করা হয়।
বাংলাগভনেট এবং ইনফো-সরকার ২য় পর্যায় শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ১৮,৪৩৪ টি সরকারি দপ্তরে (মন্ত্রণালয়, বিভাগ, জেলা এবং উপজেলা) অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবলের মাধ্যমে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে।
ইনফো-সরকার ২য় পর্যায় শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে ৮৯৩টি ভিডিও কনফারেন্সিং সিস্টেম স্থাপন, ২৫,০০০ জন সরকারি কর্মকর্তাদের মাঝে ট্যাব বিতরণ, বাংলাদেশ সচিবালয় ও আইসিটি টাওয়ারে ইন্টারনেট সহজলভ্য করতে WiFi নেটওয়ার্ক স্থাপন,৪৮৭টি ইউএনও কার্যালয়ে সৌর বিদ্যুৎ সুবিধা প্রদান, ২৫৪ টি এগ্রিকালচারাল ইনফরমেশন সেন্টার এবং ২৫ টি টেলিমেডিসিন সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে।
জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অবকাঠামো উন্নয়ন (ইনফো-সরকার ৩য় পর্যায়) (২য় সংশোধিত) প্রকল্পটি ১ জানুয়ারী ২০১৭ থেকে ৩০ জুন ২০২২ খ্রি. পর্যন্ত বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের অধীনে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় ৬৩ জেলার ৪৮৮টি উপজেলায় ২৬০০ ইউনিয়নে দ্রুতগতির ব্রডব্যান্ড সেবা প্রদানের লক্ষ্যে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন যন্ত্রপাতি ও অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল স্থাপনের কাজ সমাপ্তির পর্যায়ে রয়েছে এবং এ পর্যন্ত ২৫৯৯টি ইউনিয়ন NMS-এর সাথে সংযুক্ত হয়েছে। এছাড়া, এ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ পুলিশের ১০০০টি অফিসের মধ্যে Virtual Private Network (VPN) সংযোগ স্থাপনের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। করোনা এবং করোনা উত্তর স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, কৃষি, শিক্ষা এবং অন্যান্য খাতে পরিবর্তিত পরিস্থিতি সম্পর্কিত নিশ্চিত তথ্যগুলি তৃণমূল পর্যায়ের নাগরিকদের জানা প্রয়োজন। ইনফো-সরকার ফেজ-৩ প্রকল্পের তৈরি এ পরিকাঠামো নাগরিকদের সকল সরকারি পরিষেবা সম্পর্কিত তথ্য সরবরাহ এবং দক্ষতার সাথে সচেতন করার জন্য একটি সুপার হাইওয়ে হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
ইনফো-সরকার ফেজ-৩ প্রকল্প কর্তৃক স্থাপিত নেটওয়ার্কের আওতা বহির্ভূত দুর্গম ও প্রত্যন্ত এলাকাসমূহের অবশিষ্ট ৬১৭টি ইউনিয়ন কানেক্টিভিটি প্রদানের লক্ষ্যে “কানেক্টেড বাংলাদেশ” শীর্ষক প্রকল্পের বাস্তবায়ন চলমান রয়েছে।
জাতীয় নেটওয়ার্ক অপারেশন সেন্টার (এনওসি)-এর কেন্দ্রিয় মনিটরিং সিস্টেমের আওতায় এ পর্যন্ত ১৭,৩৮০ টি দপ্তরের নেটওয়ার্ক ও ওয়াইফাই সেবা প্রদান করা হয়েছে। এ নেটওয়ার্কে ৯০২ টি ভিডিও কনফারেন্সিং সিস্টেম সংযুক্ত করা হয়েছে। মনিটরিং সিস্টেমের অন্তর্ভুক্ত সরকারি দপ্তর ব্যতিত বাংলাদেশ সচিবালয়ে ৫১১ টি এক্সেস পয়েন্টের মাধ্যমে ফ্রি ওয়াইফাই সেবা প্রদান করা হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে মাঠ পর্যায়ের দপ্তরসমূহে মোট ২৫০০ ভিডিও কনফারেন্সিং-এ নেটওয়ার্ক সংযোগসহ সকল প্রকার কারিগরি সহযোগিতা বিসিসি হতে সফলভাবে প্রদান করা হয়েছে। ভিডিও কনফারেন্সিং সিস্টেম আধুনিকায়নের নিমিত্ত বিসিসিতে সর্বশেষ প্রযুক্তির 4K Multi Conferencing Unit (MCU) এবং (4K Codec, 4K Camera, 4K Display, Microphone Array, Vidéo Matrix Switch and Tripod) স্থাপন করা হয়েছে। ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষে Agile Controller সহ 5G টেকনোলজির ওয়াইফাই-৬ স্থাপন করা হয়েছে।
South Asia Sub Regional Economic Cooperation Information Highway (SASEC IH) প্রকল্পের Regional Network (RN) এর আওতায় ভারত, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের মধ্যে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল দ্বারা সংযোগ প্রদান এবং ডাটা আদান-প্রদানের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিটিসিএল কর্তৃক শিলিগুড়িতে স্থাপিত NOC এর সাথে সংযোগের জন্য পঞ্চগড় জেলা হতে বাংলাবান্দার নোম্যান’স ল্যান্ড পর্যন্ত ৫৬ কিঃমিঃ অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল স্থাপন এবং কোলকাতা হয়ে শিলিগুড়ির NOC এর সাথে সংযোগের জন্য বিটিসিএল চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, মগবাজার, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁয়ে Transmission Equimentes স্থাপন করা হয়েছে। Village Network (VN) আওতায় দেশের ৩০টি উপজেলায় ৩০টি কমিউনিটি ই-সেন্টার বা উপজেলা তথ্য সেবা কেন্দ্র স্থাপন এবং Research and Training Network (RTN) এর আওতায় কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ভারত, নেপাল ভুটান ও বাংলাদেশে ৪টি ওয়েব পোর্টাল তৈরী এবং http://rtn.bcc.net.bd/ নামে একটি ওয়েব পোর্টাল বিসিসির জাতীয় ডাটা সেন্টারে হোষ্ট করা হয়েছে।
বিসিসিতে ১টি Specialized Network Lab এবং ১টি Special Effect Lab স্থাপন করা হয়েছে। এ সকল ল্যাব নেটওয়ার্কিং, মোবাইল এ্যাপস, মোবাইল গেইম এবং সাইবার সিকিউরিটি, বিগডেটা ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
ই-সেবা উন্নয়ন ও ব্যবহার সহজীকরণে Bangladesh National Digital Architecture (BNDA) উন্নয়ন করা হয়েছে। ৩০ টি নাগরিক সেবা, ই-সেবা ও সরকারি অ্যাপ্লিকেশন সিস্টেম বর্তমানে জাতীয় ই-সার্ভিস বাসের সাথে সংযুক্ত আছে। বিটিআরসি এর CBVMP ডাটাবেজ ই-সার্ভিস বাসের সাথে সংযুক্তকরণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পরিচয় প্ল্যাটফর্মটি বর্তমানে পরীক্ষামূলক ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
বিসিসি’তে সফটওয়্যার এবং হার্ডওয়্যার কোয়ালিটি টেস্টিং ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে দেশে সফট্ওয়্যার ও হার্ডওয়্যার এর মান নিশ্চিত করা সহজ হবে।
বিসিসি’তে উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমী নির্মাণ করা রয়েছে। এর ফলে দেশে টেকসই উদ্ভাবনী ইকোসিস্টেম গড়ে উঠবে।
ডিজিটাল আইল্যান্ড মহেশখালী শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় একটি ৫০ মিটার উচ্চতার Self-supported টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে। যার মাধ্যমে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা চালু করা হয়েছে। এর আওতায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ক্ষেত্রে ই-সেবা ও ই-কমার্স সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
‘ডিজিটাল সিলেট সিটি’ প্রকল্পের আওতায় সিলেটকে “সেফ সিটি” করার লক্ষ্যে আইপি ক্যামেরা ভিত্তিক সার্ভিল্যান্স সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। এ কম্পোনেন্টের আওতায় সিলেট জেলায় স্থাপিত ৯০ টি আইপি ক্যামেরা, ১০ টি ফেস রিকগনিশন ক্যামেরা, ১০ টি অটোমেটিক নম্বরপ্লেট রিকগনিশন ক্যামেরা সহ সর্বমোট ক্যামেরার সংখ্যা ১১০ টি। গত ০৬.০১.২০২১ তারিখে আইপি ক্যামেরা ভিত্তিক সার্ভিল্যান্স সিস্টেমটি আনুষ্ঠানিকভাবে বিসিসি কর্তৃক সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
আইডিয়া ফ্যাব ল্যাব স্থাপন: স্টার্টআপদের উদ্ভাবনী পণ্য উৎপাদনে গবেষণা ও টেস্টিং সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে বিশ্বমানের উন্নত ডিভাইসের সমন্বয়ে প্রকল্প কার্যালয়ে একটি আইডিয়া ফ্যাব ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। Digital Oscilloscope (Four Channel), Function Generator, PCB CNC Milling machine, ROBOT Station with Artificial Vision System, IOT & Communication Trainer এবং Digital Trainer সহ স্টার্টআপদের জন্য প্রয়োজনীয় এবং যুগোপযোগী অন্যান্য হাই ক্যাপাসিটি এবং অত্যাধুনিক ডিজিটাল টেস্টিং যন্ত্রপাতির সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে এই ফ্যাব ল্যাব। তরুণ উদ্যোক্তা, স্টার্টআপ এবং সংশ্লিষ্টরা তাদের উদ্ভাবনী পণ্য উৎপাদনের বিভিন্ন ধাপে টেস্টিং এবং গবেষণার সুবিধা এ ল্যাবে গ্রহণ করতে পারবে।
বিজিডি ইগভ সার্ট শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব, “Cyber Range”, সাইবার ডিফেন্স প্রশিক্ষণ সেন্টার এবং ১৫টি নির্দিষ্ট সরকারী গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো (Critical Information Infrastructure) সাইবার সেন্সর প্রযুক্তি স্থাপন করা হয়েছে।